শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

চেক নিয়ে প্রতারিত হলে কি করনীয়

ধরা যাক, আপনি এক বেক্তির কাছে দশ লাখ টাকা পান। লোকটির কাছে টাকা চাইতে গেলে তিনি দশ লাখ টাকার একটি চেক দিলেন। আপনি চেকটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দিলেন। কিন্তু ব্যাংক ‘অপর্যাপ্ত ফান্ড’ দেখিয়ে চেকটি ফিরিয়ে দিল। আপনি কয়েক দিন পর আবারও টাকা তুলতে গেলেন; কিন্তু এবারও বলা হোল; যিনি আপনাকে চেকটি দিয়েছেন তার হিসাবে যথেষ্ট টাকা নেই। আপনি মহা চিন্তায় পরে গেলেন। চেক দাতার কাছে বার বার চেয়েও আর লাভ হল না। এখন আপনি কি করবেন? প্রচলিত আইনেই আপনি এর প্রতিকার চাইতে পারেন। এই অপরাধের বিচারের জন্য হস্তান্তর যোগ্য দলিল আইন, ১৮৮১ নামের একটি আইন রয়েছে। এই আইনের ১৩৮ নম্বর ধারায় আপনি প্রতারক বেক্তির বিরুদ্ধে প্রতিকার পেতে পারেন।



মনে রাখতে হবে, চেক দিজঅনারের ক্ষেত্রে কিছু সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমা পার হয়ে গেলে আর প্রতিকার পাওয়া যায় না। প্রথমেই যেটি জেনে রাখতে হবে তা হল, যে কোন চেক ইস্যু করার তারিখ থেকে ৬ মাসের মধ্যে ব্যাংকে উপস্থাপন না করলে চেকটির কার্যকারিতা আর থাকে না। এ ক্ষেত্রে প্রতিকার পাওয়ার প্রথম শর্ত হচ্ছে, চেকটি ইস্যুর তারিখ থেকে ছয় মাস সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ক্যাশ করার জন্য জমা দিতে হবে। চেকটি ব্যাংক থেকে দিসঅনার হওয়ার পর থেকে ৩০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধের জন্য চেক প্রদানকারীকে লিখিতভাবে নোটিশ দিতে হবে। প্রথমে চেষ্টা করতে হবে নোটিশটি বেক্তিগতভাবে সরাসরি চেক প্রদানকারীর উপর জারি করতে হবে। যদি এ ক্ষেত্রে সম্ভব না হয়, তার বাসস্থান বা যে স্থানে তিনি সর্বশেষ কাজ করেছেন, সেই ঠিকানায় প্রাপ্তি স্বীকার রশিদসহ (এডি) ডাকযোগে নোটিশ পাঠাতে হবে। উল্লেখ্য, নোটিশটি ফেরত না এলেও নোটিশটি চেক প্রদানকারীর ওপর সঠিক ভাবে জারি হয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে। নোটিশ জারির তৃতীয় পদ্ধতিটি হচ্ছে, একটি বহুল প্রচলিত জাতীয় পত্রিকায় নোটিশটি প্রকাশ করা। ঐ নতিশে চেক প্রদানকারীকে টাকা পরিশোধের জন্য ৩০ দিনের সময় বেঁধে দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে চেক প্রদানকারী টাকা পরিশোধে বেরথ হলে এ সময় পার হবার পর তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। কোন ভাবেই নোটিশ প্রদান না করে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না। কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতারনার শিকার হলে এই আইনের ১৩৮ ধারার পাশাপাশি ১৪০ ধারা উল্লেখ করে মামলা করতে হবে। এ ধরনের নোটিশ জারি ও মামলা করার জন্য আপনি একজন আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে পারেন।

এ ধরনের অভিযোগ নালিশি মামলা বা সিআর মামলা হিসেবে মহানগর এলাকা হলে চিফ মেট্রো পলিটান মাজিস্ট্রেট আদালতে অথবা মহানগরের বাইরে হলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করতে হবে। মামলা করার সময় আদালতে মুল চেক, ডিজঅনারের রসিদ, আইল নোটিশ বা বিজ্ঞপ্তির কপি, পোস্টাল রসিদ, প্রাপ্তি রসিদ আদালতে প্রদর্শন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, একবার চেক ডিজঅনার হলে একবার অপরাধ সংঘটিত হয়।




এই বিষয়ে আর কোন  পরামর্শের জন্য ফোন করুন এই নম্বরে-  01677-125666

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন